বর্তমান সময়ের আহ্বান — মুশফিক বরাত
প্রত্যেক দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানের সবচেয়ে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা দিতে হবে। যেমন- বাংলাদেশের ক্ষেত্রে SPARRSO , ভারতের ক্ষেত্রে ISRO, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে ESA; তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে NASA. বিজ্ঞান আন্দোলনের ক্ষেত্রে পুরুষ-নারী উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে।
বেগম রোকেয়া যেমন প্রথম এগিয়ে এসেছিলেন নারী জাগরণে তেমনি বেনজিন রিং সোসাইটি প্রথম প্রকাশ্য ঘোষণা রেখেছে মহাকাশ জয়ের। একের পর এক বাসযোগ্য গ্রহে বসতি স্থাপনের আর হাইড্রোজেন ফুয়েল সংগ্রহ করতে করতে সম্পূর্ণ ইউনিভার্স ভ্রমণের। যা ভিন্ন কোনো অত্যাধুনিক নয়া আবিষ্কৃত জ্বালানি দিয়েও সম্ভব হতে পারে। মানুষকে শীঘ্রই নেমে পড়তে হবে এক্সোপ্ল্যানেট সন্ধানে।
বাংলাদেশেও নাসার মতো যোগ্য প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন আছে যেমন SPARRSO- কে শক্তিশালী করাটা আরো জরুরী। তাছাড়া NASA ও SPARRSO-র মিলিত সংগ্রামে মহাকাশ গবেষণায় আসতে পারে নতুন মাত্রা, ভিন্ন আঙ্গিক। ঢাকার অদূরে বিজ্ঞানের সবগুলো শাখায় জোর দিয়ে একটি সর্বাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মানুষ এখনো আপন গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে (আকাশগঙ্গা) পুরোপুরি আবিষ্কার করতে পারেনি তাহলে মহাবিশ্বের সবগুলো গ্যালাক্সি কিংবা অবজারভেবল ইউনিভার্সের বাইরে বাদবাকি নব্বুই ভাগ গ্যালাক্সির কাছে পৌঁছুবে কবে! সাম্রাজ্যবাদী দেশের সাথে শুধুমাত্র মহাকাশ গবেষণায় বন্ধুত্ব হতে পারে কিন্তু রাজনৈতিক প্রশ্নে নয় । একথা জেনে রাখাটা উচিত যে,বেনজিন রিং সোসাইটি একটি প্রগতিশীল সংগঠন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী ১০০০ বছরের মধ্যে পৃথিবী তলিয়ে যেতে চলেছে-ধ্বংস হতে চলেছে। সেজন্যে “মডেল গ্রীন হাউস”এর দিকে নজর দেওয়াটা একান্ত কাম্য। তাহলে মানুষ কি পারবে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার শেষ লড়াইটা চালাতে?
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা সামাজিক অবকাঠামোয়। যোগাযোগ ও অবকাঠামো এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে বাজেট অত্যধিক । অন্যদিকে মহাকাশ গবেষণায় বরাদ্দ নেই। তাই শতকরা পাঁচ ভাগের দাবি রইল।
খনিজ সম্পদ এদেশের জনগণের সম্পদ। এক্ষেত্রে দেশের মানুষের একশো ভাগ মালিকানার দ্বায়ভার নিশ্চিত এবং তেল-গ্যাসের জাতীয়ভিত্তিক সুষম বণ্টন জরুরী। উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি দিয়ে তেল-গ্যাস-কয়লা উত্তোলিত হলে ব্যয় কমবে এবং রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে নজর না দিয়ে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও ইউএসএইডের দিকে তাকিয়ে থাকাটা বোকামি। দেশের অসংখ্য তরুণ ক্রিয়েটিভ মেধায় ডিগ্রি অর্জন করেছে। তাদের সামর্থ্য পরিক্ষিত, মেধা যথেষ্ট আর কর্মদক্ষতা প্রমাণিত। এভাবে কর্মপন্থা নির্ধারণ করলে শিল্পায়ন ও জ্বালানিতে মৌলিক পরিবর্তন সম্ভব।
আমাদের দেশটা কৃষিনির্ভর। দেশের বেশিরভাগ মানুষের জীবনযাত্রা নির্ভর করে কৃষির উপর। পর্যাপ্ত দক্ষ ও অদক্ষ জনশক্তিসহ আমাদের রয়েছে প্রচুর কৃষিজ কাঁচামাল। ক্ষুদ্র ও বৃহদায়তন কুটির শিল্প এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক আশার আলো দেখাতে পারে। সবজি, ফুল-ফল ও চিনি জাতীয় পণ্য উৎপাদনে সৃষ্টিশীল বুদ্ধিবৃত্তিক মেধার ব্যবহার উন্নত জাত ও বীজ উদ্ভাবনে সহায়তা দেবে।
বেনজিন রিং সোসাইটির বর্তমান আট দফা-
১। প্রত্যেক জেলায় উচ্চতর গবেষণার্থে সরকারি অর্থায়নে একটি করে বেনজিন রিং সোসাইটি স্থাপন করতে হবে। এবং সেখানে মহাকাশ গবেষণায় প্রাধান্য থাকবে।
২। মহাকাশ গবেষণায় বাংলাদেশের বাজেটে কমপক্ষে ৫% বরাদ্দ দিতে হবে।
৩। আবহাওয়ার পূর্বাভাস গ্রহণে একটি উন্নত স্যাটেলাইট পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করতে হবে। যা হবে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস গ্রহনে সক্ষম।
৪। ঢাকার অদূরে উচ্চতর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় একটি আধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন জরুরী । যেখানে বিজ্ঞানের নানা শাখায় SPARRSO-র নেতৃত্বে সৃষ্টিশীল মেধার কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ কর।
৫। বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে প্রাকৃতিক ও জাতীয় সম্পদের সঠিক উত্তোলন। আর দেশের অভ্যন্তরীণ স্বার্থে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রকৃত বণ্টন নির্ধারণ ও দেশীয় স্বার্থে কঠোর নজরদারি।
৬। পরিবেশবান্ধব কৃষির উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ।
৭। প্রত্যেক জেলায় ১০ একর জমিতে ৩০ (ত্রিশটি) করে “মডেল গ্রীন হাউস” তৈরি করতে হবে। যেখানে ফলমূল-শাকসবজি ও ফুলের চাষাবাদের ব্যবস্থা তৈরি এবং উপজেলা কৃষি অফিসারের নেতৃত্বে থানায় থানায় তা পৌঁছিয়ে দিতে হবে।
৮। কলকারখানার পরিকল্পিত স্থাপন জরুরী ও বর্জ্য নিষ্কাশনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরিবেশ দূষণ কমানোয় জোর দাও।