An open proposal letter to NASA from IAA & Benzene Ring Society — Mushfiq Borat
বেনজিন রিং সোসাইটি ২০১৩ সালে গঠিত হয়েছিল। ঢাকার ধানমন্ডিতে যার জন্ম। International Astronomy Association পৃথিবীর চারটি প্রধান মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে প্রাধান্য দেয়। যার মধ্যে প্রথমেই আসে NASA-র নাম। তারপর একে একে আসে European Space Agency, Indian Space Research Organisation & SPARRSO-র নাম। শুধুমাত্র NASA-কে প্রধান সংস্থা বানিয়ে বিদায় হয়ে গেলেই চলবে না। এই চারটি মহাকাশ সংস্থাকে নিয়ে পৃথিবীর মহাকাশ গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সকল Space Agency-র নেতৃত্বে পৌঁছুতে হবে। যাতে NASA থাকবে প্রধান ভূমিকায়। International Astronomy Association (IAA) হলো Benzene Ring Society-র একটি সহযোগী সংগঠন।
একটি এক্সোপ্ল্যানেটে কিংবা সৌরমন্ডলের গ্রহে প্রাণের অনুসন্ধানে যেমন পানির ( H2O ) উপস্থিতির খোঁজ প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন জৈব অণুর খোঁজ।
জীবদেহ গঠন করতে যেসব অণু প্রত্যক্ষভাবে পাওয়া যায় তাদের বলা হয় জৈব অণু (Biomolecule). যেসকল অণুতে ২৫টিরও বেশি মৌলিক পদার্থ পাওয়া সম্ভব। এগুলোর মধ্যে সাধারণ উপাদান হলো ছয়টি মৌলিক পদার্থ (আমার বেনজিনীয় ষষ্ঠতলকীয় তত্ত্বের মতোই)। যাদের ইংরেজি বানানের আদ্যাক্ষর নিয়ে শব্দ সংক্ষেপ করা হয়েছে তা হলো- CHNOPS. যথা- (Carbon, Hydrogen, Nitrogen, Oxygen, Phosphorus and Sulfur). পৃথিবীর আদিম মহাসমুদ্রে যে সকল অণু তৈরি হয়েছিল তাদেরই বলা হয় জৈব অণু। সবচেয়ে সরল জৈব যৌগ হচ্ছে হাইড্রোজেন ও কার্বন দিয়ে। বেনজিনের মতোই। জৈব যৌগের প্রাথমিক সদস্য হলো মিথেন।
বিবিসি’র তথ্যানুযায়ী, কিউরিওসিটি রোভার রোবটযান মঙ্গলগ্রহের বুকে গেল ক্রেটার নামে একটি জ্বালামুখের ভেতর থেকে কার্বন ও সালফার পেয়েছে যা গ্রাণের অস্তিত্বের জন্য জরুরী। বলা বাহুল্য যে, কার্বন ও সালফার দুটোই জৈব অণু। IAA ও Benzene Ring Society-র দাবী হলো, কোন গ্রহে প্রাণের অনুসন্ধান চালাতে হলে জৈব অণু ও পানি উভয়েরই সমান গুরুত্বের সহিত খোঁজ চালাতে হবে। নইলে প্রাণের অনুসন্ধান ব্যর্থ হবে কিংবা সঠিকভাবে কাজ করবে না।
বেনজিন একটি অ্যারোমেটিক যৌগ। বেনজিনের গঠন থেকে দেখা যায় যা ৬ সদস্যের একটি চক্রীয় যৌগ। হাকেল তত্ত্ব অনুসরণে, বেনজিন অণুতে ৬টি পাই ইলেকট্রনের উপস্থিতি প্রয়োজন। বেনজিন অণুতে তিনটি দ্বিবন্ধনে ৬টি পাই ইলেকট্রন রয়েছে। ৬টি পাই ইলেকট্রনের উপস্থিতি হাকেল তত্ত্বকে অনুসরণ করে। কিছু বেনজিন জাতক যৌগ হলো ন্যাফথালিন, পিরিডিন, সাইক্লোহেক্সাডাইইন, সাইক্লোহেক্সাট্রইইন অ্যানায়ন, পাইরান, অক্সাজিন, থায়াজিন, পিরিমিডিন, পিপারেজিন ও থাইইন। এগুলোর সার্বিক গবেষণায় নজর দেওয়াটা জরুরী। এই যৌগগুলোর মিলিত রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কি কি উৎপন্ন হবে তাও দেখার বিষয়।
জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত মিথেন, পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, কেরোসিন, কাঠ ইত্যাদি জৈব পদার্থ। আপনারা জানেন যে, জৈব যৌগ কার্বন ও হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত হয়। তেমনি বেনজিনও কার্বন ও হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি নিয়ে আন্দোলনের শেষ নেই। বামপন্থী ও ডানপন্থী উভয় সংগঠনই জ্বালানি নিয়ে মুভমেন্ট চালাচ্ছে। সভা- সেমিনার- বক্তৃতা- মিছিল হচ্ছে। বেনজিন অ্যারোমেটিক যৌগ নিয়ে গবেষণা চালালে যা গবেষণাগারে তৈরি সম্ভব।
তাছাড়া আবার নতুন করে ফ্রিডেল ক্রাফট (Fridel-Crafts reaction) বিক্রিয়ার দিকে নজর দেবার সময় এসেছে। সংক্ষেপে বললে, অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড বা অন্য কোন লুইস এসিডের উপস্থিতিতে বেনজিনের সাথে RX বা RCOX বিক্রিয়ায় বেনজিনের এক বা একাধিক হাইড্রোজেনকে অনুরূপ সংখ্যক অ্যালকাইল দ্বারা প্রতিস্থাপন করে (R-) বা (RCO-) প্রতিস্থাপিত বেনজিন উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে ফ্রিডেল ক্রাফট বিক্রিয়া বলে।
অ্যালকেনের কয়েকটি সদস্যের নাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- মিথেন, ইথেন, প্রোপেন, বিউটেন। আমরা সিগারেট ধরাতে যে লাইটার ব্যবহার করি তাতে সাধারণত বিউটেন গ্যাস থাকে। বিউটেনের স্ফুটনাংক −5 ° সে. । কিন্তু এতে বিউটেন তরল অবস্থায় থাকে। বিউটেনের সংকেত হলো, CH3-CH2-CH2-CH3.
এবার NASA-র প্রসঙ্গে আসা যাক। এতক্ষণ ধরে যা আলোচনা হলো তার প্রায় সবই জৈব যৌগ। নাসার প্রতি দাবি রইলো, জৈব যৌগ শুধুমাত্র জৈব যৌগ নিয়ে গবেষণার জন্য একটি আলাদা department (a particular Center) খোলা। নাসাতে বেশকিছু department রয়েছে। যেমন- Jet Propulsion Laboratory, Wallops Flight Facility, Johnson Space Center কিংবা Armstrong Flight Research Center ইত্যাদি। এখানে আরেকটি particular Center খুলতে হবে যার নাম হবে Benzene Ring Society. যেখানে শুধুমাত্র জৈব যৌগ নিয়ে গবেষণা হবে এবং যারা মহাকাশের গ্রহগুলোতে প্রাণের অনুসন্ধানে জৈব অণু ও পানির খোঁজ করবে। আর এসবই দাঁড়াবে একটি সংগঠনের (organization) ব্যানারে বা প্ল্যাটফরমে (Platform). সেটার নাম হলো International Astronomy Association (IAA). NASA ছাড়াও ESA, ISRO, JAXA, UAE Space Agency, Canadian Space Agency এর সদস্য হতে পারবে।
NASA-র গুরুত্বপূর্ণ মিশনগুলোর দিকে নজর দেওয়া যাক। ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ তৈরি করা হয়েছে। যাতে নাসার সঙ্গ দিয়েছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি। পৃথিবীর ১০ থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এই টেলিস্কোপ। ইউনিভার্সের রহস্য উন্মোচনে কাজ করবে এই টেলিস্কোপ। এতে Roscosmos-এর সহযোগিতা নিলেও বেশ করতো নাসা। এখনো তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের দেখা মেলেনি। তবে সাফল্য আসছে। মহাকাশে হেঁটে আইএসএসের একটি অ্যানটেনা পরিবর্তন করেছেন দুই নভোচারী। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় কাজটি সেরেছেন তারা। যারা কাজ করেছেন তারা হলেন- থমাস মার্শবার্ন ও কায়লা ব্যারন। ৩৪ বছর বয়সী ব্যারনের মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা এটাই প্রথম। অ্যানটেনাটির বয়স ছিল ২০ বছরের বেশি।
রকেট ছুড়ে ধেয়ে আসা গ্রহাণুর পথ পরিবর্তন করবে নাসা। ঘটনাটি সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের দ্যা গার্ডিয়ান বলেছে, মহাকাশের সঙ্গে এই এক দিনে বদলে যাবে আমাদের সম্পর্ক। পৃথিবী থেকে ডাইনোসর বিলুপ্তির মূল কারণ গ্রহাণুর আঘাত বলে ধরা হয়। মহাজাগতিক বস্তুর আঘাতে মারা যায় ডাইনোসর। মানুষের কপালে একই ভাগ্য আছে কিনা তাও ভাববার সময় এসেছে এখন!!
তাছাড়া আমি NASA Earth-এর official facebook page-র একজন Top fan হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা নাসা তাদের “নাসা স্পেস অ্যাপস প্রতিযোগিতা ২০২০”-র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। বিশ্বের ১৫০ দেশের ৩৮০০ প্রজেক্টের মধ্যে বাংলাদেশের টিম ‘বুয়েট জেনিথ’ অনারেবল মেনশন ক্যাটাগরিতে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নাসা বলছে, এলিয়েনরা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। তাদের সাথে লড়াইয়ের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা প্রয়োজন। আমাদের সোলার সিস্টেম বা সৌরমন্ডলের বাইরে ৫০০০-র বেশি গ্রহ বা Exoplanet রয়েছে। বহির্জগতে প্রায় ৩০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণের পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। এই সমস্ত এক্সোপ্ল্যানেটে রুক্ষ পাথুরে পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। যেসবের আয়তন পৃথিবীর তুলনায় বড় হয় তাদের বলা হয় ‘সুপার আর্থ’। কিছু কিছু আছে গ্যাস জায়ান্ট। এগুলোকে ‘মিনি নেপচুন’-ও বলা হয়। এদের বেশির ভাগই মৃত বা মৃতপ্রায় নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে। আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ের বাইরে অনেক এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান পেয়েছেন তারা। IAA ও Benzene Ring Society-র যৌথ উদ্যোগে আমরা এক্সোপ্ল্যানেট খুঁজছি। আমাদের কাজ অনেকদূর এগিয়েছে। SPARRSO এ ব্যাপারে বৃহৎ ভূমিকা রাখছে। কোনো গ্রহকে প্রাণ থাকার উপযোগী হতে হলে কিছু বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। যেমন- (ক) পাথুরে গ্রহ হতে হবে, (খ) গ্রহগুলোকে ছোট হতে হবে, (গ) জীবনধারণের উপযোগী স্বরূপ, (ঘ) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হলো, গ্রহটিকে তার মাতৃনক্ষত্রের এমন কক্ষপথে থাকতে হবে যাতে যেখানে পানি থাকে। আর সেই গ্রহেই ঠাঁই মিলবে আমাদের- বেঁচে যাবে মানবজাতি। এমন দশটি এক্সোপ্ল্যানেট হলো যথাক্রমে- Gliese 667Cc, KEPLER-22B, KEPLER-69C, KEPLER-62F, KEPLER-186F, KEPLER-442B, KEPLER-452B, KEPLER-1649C, PROXIMA CENTAURI B ও TRAPPIST-1E.
জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change)-কে নিয়ে কাজ করা বেনজিন রিং সোসাইটির (BRS) অন্যতম পদক্ষেপ। বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে এটি কাজ করছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের সাথে যৌথভাবে কাজের জন্য BRS-এর পক্ষ থেকে আলোচনা হয়েছে। কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃহত্তম গ্রীন হাউস গ্যাস কিন্তু মিথেন, সিএফসি, ওজোন, নাইট্রোজেন অক্সাইড গ্যাস গ্রীন হাউস গ্যাস হিসেবে কাজ করে। বিশ্বের উন্নত ৬টি দেশ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গত করে। তারা হলো- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রাজিল, চীন, ভারত ও জাপান। ওজোনস্তর ক্ষয় খুব ভয়ংকর একটি বিষয়। বায়ুমন্ডলের স্ট্রাটোস্ফেয়ারে ওজোন গ্যাস থাকে। এখানকার ওজোন গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত স্তরকে ওজোনস্তর বলে। সূর্য থেকে নির্গত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি (UV) ওজোনস্তর ক্ষয় করে। নাম সংগঠন হিসেবে BRS একটি জলবায়ু পরিবর্তনরোধী সংগঠন। এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কী তা আমাদের ভেবে দেখা উচিত। এতে পানির সংকট তৈরি হবে। খাদ্য উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়বে। কোনো কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা বিপজ্জনক হারে বেড়ে যাবে ও সমুদ্রের পানি বেড়ে বহু এলাকা প্লাবিত হবে। অনেক জায়গা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। উত্তর মেরুর জমাট বাধা বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। সাগরের উচ্চতা বেড়ে যাবার কারণে উপকূলের নিচু এলাকা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সাইবেরিয়া থেকে মিথেন গ্যাস বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বন-জঙ্গলে আগুন লাগার ঝুঁকি বাড়ছে। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২৫ শতাংশের বসবাস। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলবর্তী অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উন্নত দেশগুলোকে বলা হচ্ছে ২০৫০ সাল নাগাদ গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গমন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। এ সময়টায় খুব করে গাছ লাগানো ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারে।
এসব ব্যাপারগুলোতে যেমন IAA এগিয়ে আসছে তেমনি বেনজিন রিং সোসাইটি (Benzene Ring Society)-ও এগিয়ে আসছে। তাই নাসা (NASA)-র প্রতি উদাত্ত আহ্বান এ সমস্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে দেখুন এবং মহাকাশ গবেষণা ও বিশ্বরক্ষায় এগিয়ে আসুন।