কর্তৃত্ববাদী সরকারের অরাজকতা - মুশফিক বরাত
November 3, 2024 at 7:28 pm,
No comments
তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং অনির্বাচিত বা অবিপ্লবী সরকার এগুলো হলো কর্তৃত্ববাদী সরকার।কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণের রায় মানবে না।তারা জনগণের বিপক্ষে কথা বলে।নির্বাচনের ধোঁয়াশা তুলে একদম উড়িয়ে দেয় রাষ্ট্রকে।একটা পার্টির রাজনৈতিক সক্ষমতার উপর আস্থা রাখে না।পোস্টমর্ডানিজমকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।বিপ্লবী সরকারের উপর পূর্ণ আস্থা স্থাপন করতে চায় না।তাইতো এটা এক ধরণের রাজনৈতিক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।জনগণের রায় ছাড়া এই মধ্যবর্তীকালীন ব্যবস্থা তা শুধু কিছুদিন বা স্বল্প সময়ব্যাপী চলতে পারে।অনেকদিন ধরে চলতে দেওয়াটা এক ধরণের বুর্জোয়া দূর্বলতাও বলা যায়।তাই একটি বিপ্লবী পার্টির গুরুত্ব স্বীকার করে নিতেই হয়।
বেশিদিন অতিবাহিত হলে কর্তৃত্ববাদী সরকার বুর্জোয়া চরমপন্থা অবলম্বন করে।শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষের উপর চড়াও হয়।সদা উত্তেজিত সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেয় ও নিজেদের প্রতিক্রিয়াশীল অভিমত চাপিয়ে দেয়।এমতাবস্থায় বুর্জোয়া ও পেটি বুর্জোয়াসর্বস্ব নামধারী রাজনৈতিক দলগুলো সুবিধাবাদী অবস্থান নেয়।তারা জোটবদ্ধ হয় ও ভুয়ো নির্বাচনের ধোঁয়া তোলে।যেন নির্বাচনই একমাত্র কর্মপন্থা ও কর্মপদ্ধতি।অথচ যেখানে টাকার খেলা ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।এভাবে বলে রাখা ভালো, তারা কর্তৃত্ববাদী সরকারসহ বিপ্লব স্বীকার করে না।যেন রাষ্ট্রটা একটা খেলাধুলোর মাঠ; শ্রমজীবী জনতার মূল্য নেই।আমরা কমিউনিস্টরাও এভাবে বলে রাখতে চাই যে, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে যেকোনো দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।
কর্তৃত্ববাদী সরকার আমাদের বারবার ভুগিয়েছে।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছে।আমরা প্রজন্ম ২৪ ভুলিনি।ঊনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান থেকে শিক্ষা নিয়ে চব্বিশের অভ্যুত্থান সফল করেছি।দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমে ধর্মকে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। মুসলমান ও হিন্দুদের পৃথক গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল।যেটা কোনোভাবেই সেক্যুলারিজমের পর্যায়ে পড়ে না।এটা একটি জাতিকে বিভক্তিতে ঠেলে দিয়েছে।অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ব্যাহত করেছে।আমরা প্রজন্ম চব্বিশ যাতে আস্থাশীল নই।এর বাইরে দাঁড়িয়ে সঠিক গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে আমরা বেড়ে উঠব।পুরো জাতিকে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
পূর্বেকার কর্তৃত্ববাদী সরকারের মতো এ সরকারের অভিমত স্পষ্ট।তাদের ভাসা ভাসা অভিমত জনগণ আর পছন্দ করে না।সাম্য, মানবিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার তারা মানে না।শ্রেণী বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থায় আপাতত আস্থাশীল নয়।তাছাড়া সুবিচার আমরা পাচ্ছি না।নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বেড়েই চলছে।দেশকে অস্থিতিশীল করছে প্রতিদিন।সেনাবাহিনীর মদতপুষ্ট এ সরকার বুর্জোয়া সংস্কৃতির আরেক প্রতিচ্ছবি।তাছাড়া মহাকাশ গবেষণায় বরাদ্দ এখনো নেই যা একটি স্বাভাবিক ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য নয়।সেকারণে আজীবন গরীবী তাদের দ্বায়ভার।এ ধরণের অস্বাভাবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা নিশ্চয়ই প্রতিক্রিয়াশীল।প্রাণযুদ্ধ সমাজকে সামনে নিয়ে না আসলে এ গরীবী কাটবে না বা সমাজ এগুবে না।এমতাবস্থায় বেনজিন রিং সোসাইটিকে অগ্রগামী সংগঠনের মর্যাদা দেওয়াটা অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য।