বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের উত্থান ও এনপিসির জন্মলাভ - কমরেড মুশফিক বরাত
December 28, 2024 at 11:48 pm,
No comments
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে এনপিসির সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।বেশ কিছু বুর্জোয়া ও পেটি বুর্জোয়া পার্টি এতে সমর্থন জানিয়েছিল।তাছাড়া কমিউনিস্টদের অকুণ্ঠ সমর্থন ভুলবার নয়।এমন পরিস্থিতিতে দেশে অরাজকতা বিরাজ করছিল।তারপরও প্রজন্ম ২৪ প্রগতি ছাত্র ফ্রন্টকে নিয়ে অকুতোভয় এগিয়েছে।জাতীয় প্রগতি কাউন্সিল(এনপিসি) জুলাই বিপ্লবে ত্রিশ দিনে ত্রিশটি কর্মসূচি দিয়েছিল এবং আগস্টের পহেলা তারিখ থেকে পাঁচ তারিখ পর্যন্ত লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত ছিল।জাতির এমন ক্রান্তিলগ্নে আমরা চিরজাগ্রত ছিলাম।তাই প্রগতি ছাত্র ফ্রন্টের এই অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না।বাংলাদেশ এনপিসিকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এবং জাতির উন্নয়নে সার্বিক ভূমিকা রাখবে এই প্রত্যাশা রইল।
গাড়িয়াল ভাই থেকে অত্যাধুনিক সুপার শপ- এই হলো ভাববাদী ধারণা, তাদের প্রচলিত মত।কিন্তু মাঝখানের যে প্রগতিশীল অভিমত তাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।জনগণের যে রক্তস্নাত ইতিহাস তাকে হালকাভাবে দেখা হচ্ছে।সম্মিলিত জনতার মিলিত সংগ্রামকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছে।একটি বিপ্লবী পার্টি ও জনতার মিলিত স্রোতকে আমলে আনা হচ্ছে না।বুর্জোয়া ঝোঁক প্রাধান্য পাচ্ছে।এভাবে শ্রমিক শ্রেণীর বিপুল ক্ষমতাকে এক মুহুর্তের জন্য হালকাভাবে নেওয়া যায়।ঐতিহাসিক ঘটনাবলীকে এভাবে বলি হতে দেওয়া যায় না।ইতিহাসকে পাতিহাঁস বলে উড়িয়ে দেওয়াটা একদম মেনে নেওয়া যায় না।স্পষ্ট করে বললে, নেতৃত্বকে অস্বীকার করা হচ্ছে।যেন নেতৃত্ব পূর্বনির্ধারিত ও চিরনির্ধারিত।
সীমাহীন দুর্নীতি, ঘুষ, চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতি, অবৈধ কমিশন, সরকারি সম্পত্তি দখল ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধার অপব্যবহার, টেন্ডার ও ঋণ জালিয়াতি, পুঁজিবাজার লুণ্ঠন, ভূমি গ্রাস, অর্থ পাচার, অভিজাত শ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, অযোগ্য লোকদের নিয়োগ, প্রকল্প ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং সরকারি কেনাকাটায় জোচ্চুরি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতিই হলো মাফিয়াতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
মনে রাখা ভালো, আমাদের দেশের মানুষের আয় গত এক বছরে কোনোক্রমেই ৫০ থেকে ৭৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়নি। কিন্তু ভোগ্যপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয়, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ক্ষেত্রবিশেষে ৬০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত। এক বছরের ব্যবধানে এতটা মূল্যবৃদ্ধি কোনো স্বাভাবিক কারণে হতে পারে না—এ কথা সবাই নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করবেন।
মাফিয়ারা আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের প্রভাব বিস্তার করে। মুক্তবাজার অর্থনীতি তাদের হাতের নাগালে।বিশ্বের প্রতিটি দেশেই তারা প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করছে।কাগজের মুদ্রা ছাড়াও ডিজিটাল মুদ্রায়ও তারা আস্থাশীল।সেকারণে সমাজতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি।
২০০৮ সালে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ জন্মলাভ করে।পাশাপাশি ফ্যাসিবাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এনপিসি-ও জন্মলাভ করে।শুরু হয় ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের একক প্রচেষ্টা।জাতীয় প্রগতি কাউন্সিলের ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে তারই ধারাবাহিক প্রতিফলন ঘটেছে।পার্টির বহু নেতাকর্মীর ত্যাগ-তিতিক্ষায় অবশেষে এ আন্দোলন জাতীয়তাবাদী রূপ লাভ করে ও সফল হয়।বহু আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছে আমাদের প্রিয় এই বাংলাদেশ।তাছাড়া জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আমাদের অবস্থানের কথা সকলের জানা।আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের শত্রু ও প্রতিহিংসাকে এনপিসি যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করবে।দেশকে এক কাঙ্ক্ষিত উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।