মহাজনী লুটেরা বনাম নব্য ফ্যাসিবাদ - কমরেড মুশফিক বরাত
ত্রিশের দশকের মধ্যভাগে ফ্যাসিস্ট হিটলার-মুসোলিনী-ফ্রাঙ্কোর যুদ্ধোন্মত্ততার প্রেক্ষিতে প্যারিস, মাদ্রিদ ও ব্রাসেলস-এ বিশ্বশান্তি ও সভ্যতা রক্ষায় বেশ কয়েকটি বিশ্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৩৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলেও পৃথিবীর দেশে দেশে শান্তির সংগ্রাম অব্যাহত থাকে। জার্মান পদানত ফরাসি দেশে শত নিপীড়ন-নির্যাতন এমনকি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বশান্তি আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক জুলিও ক্যুরি (১৯০০-১৯৫৮) যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ‘বিশ্বশান্তি পরিষদ’ গঠন করেছেন, যা বিশ্ব শান্তি আন্দোলনের ইতিহাসের চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। তাঁর জন্ম ১৯০০ সালের ১৯ মার্চ প্যারিসে এবং মারা যান ১৯৫৮ সালের ১৪ আগস্ট।
মহাজনী লুটেরা হচ্ছে ব্যাংক পুঁজি ও ব্যবসা পুঁজির সম্মিলন।বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে মহাজনী লুটেরাদের সহযোগিতা দিচ্ছে ও ব্যাংক পুঁজিকে সামনে আনছে; আরো বিশাল করে তুলছে।কর্তৃত্ববাদী সরকারের অভ্যন্তরে কিছু বুর্জোয়া-পেটি বুর্জোয়া পার্টি কর্তৃক মহাজনী লুটেরা প্রাধান্য পাচ্ছে।অন্যদিকে পাশাপাশি বেড়ে উঠছে নব্য ফ্যাসিবাদ।আগেরকালের মহাজনদের জন্য ঋণের মুনাফাই ছিল মুখ্য, তার জালে পড়ে সর্বস্বান্ত হতো গরিব কৃষকেরা।বর্তমান বৈশ্বিক মহাজনদের কাছে ঋণের মুনাফা গৌণ।প্রধান হলো ঋণ জালে কনসালট্যান্ট, দেশীয় সুবিধাভোগী আর শর্তাবলীর বড় খোপে ফেলে দেশের গতিমুখ নির্ধারণ করা; দেশের লুটেরা আর বহুজাতিক পুঁজির জন্য দেশ উন্মুক্ত করা।
মহাজনী লুটেরা বনাম নব্য ফ্যাসিবাদ- এই হলো বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ।এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হচ্ছে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে সামনে নিয়ে আসা।অতি দ্রুত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ঘোষণা দেওয়া ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রস্তুত রাখা।মবজাস্টিস ও মবটেরোরিস্ট থেকে দূরে থাকা।বাংলাদেশকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করা।দেশকে স্থিতিশীল রাখতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও প্রগতি ছাত্র ফ্রন্টকে প্রস্তুত থাকতে বলা হচ্ছে।নব্য ফ্যাসিস্ট থেকে সর্বদা সজাগ থাকা ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনাটাও জরুরী।জাতিকে এমন সংকটজনক মুহূর্তে একাকী ফেলে রাখা যায় না।বাংলাদেশকে তার অতীত গৌরব নিয়ে অনেকটা পথ এগিয়ে যেতে হবে।