সেনা বিদ্রোহের আলামত ও বাংলাদেশ - কমরেড মুশফিক বরাত
December 24, 2024 at 11:15 pm,
No comments
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পেরিয়ে গেল।আসছে সেনা বিদ্রোহের আলামত।প্রত্যেকটি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেনা বিদ্রোহ ঘটে।এটাকে মেনে নিতেই হয়।এটা রাষ্ট্রীয় স্বাভাবিক আচরণের পর্যায়ে পড়ে।খবর আসছে, বাংলাদেশ আর্মি, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে।প্রকৃত গণঅভ্যুত্থানে এই সেনা বিশৃঙ্খলার প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত হয়।সচরাচর ধারার রাজনৈতিক দলের বাইরে দাঁড়িয়ে এটা একটি প্রতিবাদের ধরণ।এটা কবে ঘটবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে তা সঠিক করে বলা যাবে না।যার তারিখ ভবিষ্যৎবাণী করা যাবে না।তবে সেনা বিদ্রোহ যে ঘটবেই তার আলামত আসছে চারিদিক থেকে।
কখনো সেনা অভ্যুত্থান সফল হয়, কখনো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে।তার কোনোটা সফল কোনোটা বিফল।রাশিয়ায় বুর্জোয়া বিপ্লব থেকে অক্টোবর বিপ্লব পর্যন্ত অসংখ্যবার সেনা বিদ্রোহ ঘটেছিল।কমরেড লেনিন যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।শ্রমিক শ্রেণীর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যেটা মূল ঘটনা প্রবাহ নয়; একটি পারিপার্শ্বিক প্রতিক্রিয়া।বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও ঘটনা দিগন্ত।সর্বোচ্চ বিকশিত পুঁজিবাদী যুগে শ্রমিক শ্রেণীর যাবতীয় স্বার্থরক্ষাই যুক্তিযুক্ত কাজ।সেনাবাহিনী এখানে শুধু সহায়ক ভূমিকায়।যেহেতু কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন এখানে জরুরী।
ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের অর্জিত এই স্বাধীনতা।বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তুরের গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস।মহান মুক্তিযুদ্ধের পর কিছুদিন পর্যন্ত দেশে চলে সঠিক সংস্কার।তারপর শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে আর স্থিতিশীল রাখতে পারেন নি। ৬৬-র ছয় দফায় তাদের ভূমিকাটুকু শুধু মেনে নেওয়া যায়।মাওলানা ভাসানী, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও কমিউনিস্টদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সহাবস্থান চিরস্মরণীয়।এর পরবর্তীতে নব্বুইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের দল-মত-নির্বিশেষে একত্রিত করেছে।শেখ মুজিবের একদলীয় বাকশালী শাসন-শোষণ ও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট রূপ বিশ্বের কাছে আমাদের মাথানত করেছে।প্রজন্ম ২৪ এবং শ্রমিক ও ছাত্রজনতা আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ চক্রান্তকে যেকোনো মূল্যে রুখে দেবে।
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ ঘটেছিল।প্রত্যেক স্বাধীন স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশেই সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী থাকে।তাছাড়া একধরণের বর্ডারগার্ডের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।বিশেষ এই তিন বাহিনী ছাড়াও বর্ডারগার্ড মাঝে মাঝে উত্তেজিত হয়, দেশাভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ঘটায়।জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সংঘটিত সিপাহী-জনতা বিপ্লবের স্মরণে পালিত স্মারক এবং ভূতপূর্ব সরকারি ছুটির দিন। কর্নেল (অবঃ) আবু তাহেরের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান জেনারেল খালেদ মোশাররফের ৩ দিনেব্যাপি সামরিক অভ্যুত্থানের পতন ঘটায়। এই বিপ্লবের ফলশ্রুতিতে জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দীদশা থেকে মুক্তি পান এবং পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ছিলেন।বায়ান্ন থেকে একাত্তর তাদের সমালোচনা করা যায় না কিন্তু পরবর্তীতে তারা দারুণভাবে সমালোচিত। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে এনপিসি লড়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিপক্ষে।জুলাই বিপ্লবের ত্রিশ দিনে জাতীয় প্রগতি কাউন্সিল(এনপিসি) লাগাতার ত্রিশটি কর্মসূচি দিয়েছিল।আগস্ট অভ্যুত্থানেও আমাদের অবস্থান ছিল অনড় ও পূর্বের ন্যায় বলবৎ।পুরো সময়টাতে আমরা লড়েছি ফ্যাসিস্ট শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে।এ কারণে এনপিসির নেতাকর্মীদের অনেক হামলা-মামলা সহ্য করতে হয়েছে।ছাত্রজনতা ও শ্রমিকের পরে সেনাবাহিনীও ক্ষেপে উঠতে পারে।এটাকে মেনে নেওয়াটা সচেতনভাবে কখনো জরুরী।রাষ্ট্র যদি শ্রমিক ও কৃষকের সরাসরি স্বার্থ রক্ষা না করে তবে আপামর জনসাধারণ দায়িত্ব নেবে না কেন?